বিশিষ্ট বাঙালি পরিচালক পার্থ ঘোষের মর্মান্তিক মৃত্যু: হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৭৫ বছর বয়সে চিরনিদ্রায় শায়িত

বিশিষ্ট বাঙালি পরিচালক পার্থ ঘোষ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৭৫ বছর বয়সে ৯ জুন সোমবার প্রয়াত হয়েছেন। বাংলা ও বলিউড সিনেমায় তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। ‘অগ্নিসাক্ষী’, ‘গুলাম-ই-মুস্তাফা’, ‘তিসরা কৌন’ ও ‘হান্ড্রেড ডেজ’সহ বহু সফল ছবির পরিচালক ছিলেন তিনি। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ১৫টির বেশি ছবি পরিচালনা করেছেন পার্থ ঘোষ। তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ চলচ্চিত্র জগৎ। পার্থ ঘোষের শেষ ছবি ছিল ২০১৮ সালের ‘মৌসম ইকরার কে দো পাল প্যর’। তিনি ‘হান্ড্রেড ডেজ’ ও ‘অগ্নিসাক্ষী’র সিকুয়েল নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা করছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে স্ত্রী গৌরী ঘোষসহ পরিবার ও শিল্পী মহল গভীর শোকাহত।

Jun 11, 2025 - 01:52
 0  4
বিশিষ্ট বাঙালি পরিচালক পার্থ ঘোষের মর্মান্তিক মৃত্যু: হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৭৫ বছর বয়সে চিরনিদ্রায় শায়িত

সপ্তাহের প্রথম দিনেই বাংলা ও বলিউড ইন্ডাস্ট্রির জন্য এক মর্মান্তিক সংবাদ এসেছে। প্রয়াত বিশিষ্ট বাঙালি পরিচালক পার্থ ঘোষ আর আমাদের মাঝে নেই। ৯ জুন সোমবার সকালেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। পার্থ ঘোষ বাংলা ও হিন্দি সিনেমার জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন, যিনি ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, মিঠুন চক্রবর্তী, মাধুরী দীক্ষিতসহ একাধিক তাবড় তারকার সঙ্গে কাজ করেছেন।

টলি কুইন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত পার্থ ঘোষের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “এই যন্ত্রণা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আমরা একজন প্রতিভাবান পরিচালক ও সুন্দর মনের মানুষকে হারিয়ে ফেললাম। সিলভার স্ক্রিনে তুমি যে ম্যাজিক সৃষ্টি করতে তার মধ্যে দিয়েই চিরদিন আমাদের হৃদয়ে জীবিত থাকবে। তোমার আত্মার শান্তি কামনা করি।” পার্থ ঘোষের সঙ্গে ঋতুপর্ণা ‘তিসরা কৌন’ ছবিতে কাজ করেছিলেন, যা হিন্দি ছবির পাশাপাশি বাংলা সিনেমার ইতিহাসেও গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে।

১৯৯০-এর দশকে ভারতীয় সিনেমায় পার্থ ঘোষের অবদান ছিল অনবদ্য। তিনি শুধু বাংলা সিনেমাতেই নয়, বলিউডেও নিজের ছাপ রেখেছেন। ১৯৯৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘অগ্নিসাক্ষী’, ১৯৯৭ সালের ‘গুলাম-ই-মুস্তাফা’, ১৯৯৪ সালের ‘তিসরা কৌন’ এবং ১৯৯৮ সালের ‘যুগপুরুষ’ তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। ‘অগ্নিসাক্ষী’ ছবিটি মনীষা কৈরালা, জ্যাকি শ্রফ ও নানা পাটেকরের অভিনয়ে বলিউডের ইতিহাসে মাইলস্টোন হিসেবে বিবেচিত। অন্যদিকে ‘গুলাম-ই-মুস্তাফা’ কাল্ট ছবি হিসেবে দর্শকদের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে, যেখানে নানা পাটেকর ও রবিনা ট্যান্ডন অভিনয় করেছিলেন।

বাঙালি হলেও পার্থ ঘোষ বলিউডে দাপিয়ে কাজ করেছেন। হিন্দি সিনেমার পাশাপাশি তিনি বাংলা শো ও ধারাবাহিকের পরিচালনাও করেছেন। দীর্ঘ ফিল্মি ক্যারিয়ারে তিনি ১৫টির বেশি ছবি পরিচালনা করেছেন। তাঁর পরিচালনায় সাসপেন্স, রোম্যান্স, ড্রামা—সব ধরনের ভিন্ন স্বাদের ছবি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন। ১৯৮৫ সালে সহ-পরিচালক হিসেবে ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখেন পার্থ ঘোষ। ধীরে ধীরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে পরিচালক হিসেবে নিজের জায়গা করে নেন। ১৯৯১ সালে মাধুরী দীক্ষিতের সঙ্গে ‘হান্ড্রেড ডেজ’ ছবিতে কাজ করে তিনি নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেন। এই ছবি ছিল তামিল ক্লাসিক ‘Nooravathu Naal’-এর রিমেক।

মিঠুন চক্রবর্তীর অভিনীত ‘গীত’ ছবিটি বক্স অফিসে সাফল্যের মুখ দেখেছিল এবং এটি পার্থ ঘোষের ক্যারিয়ারের অন্যতম সফল ছবি। দীর্ঘ বিরতির পর ২০১৮ সালে তিনি ‘মৌসম ইকরার কে দো পাল প্যর’ নামে একটি রোমান্টিক ড্রামা পরিচালনা করেন, যা তাঁর শেষ ছবি হিসেবে পরিচিত। জানা গেছে, তিনি ‘হান্ড্রেড ডেজ’ ও ‘অগ্নিসাক্ষী’ ছবির সিকুয়েল নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা করছিলেন।

পরিচালকের প্রয়াণে ভেঙে পড়েছেন তাঁর স্ত্রী গৌরী ঘোষ। পার্থ ঘোষের মৃত্যুতে বাংলা ও বলিউড ইন্ডাস্ট্রির অনেক তারকা শোক প্রকাশ করেছেন এবং তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

Tathagata Reporter