শুভেন্দুর সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, রাতারাতি ‘হিরো’ খানাকুলের মইদুল, বাড়ি এসে কী আশ্বাস ফিরহাদের?
খানাকুলের হেলান মুন্সীপাড়ার তৃণমূল সমর্থক মইদুল মুন্সী সম্প্রতি ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে ব্যাপক আলোচনায় আসেন। এই ঘটনা তার জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে দেয়, যা দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। এর ফলে তিনি রাতারাতি তৃণমূলের কাছে ‘হিরো’ হিসেবে পরিচিত হন। এরপরই কলকাতা থেকে ফিরহাদ হাকিম তার বাড়িতে যান এবং তার সাহসের প্রশংসা করেন, পাশাপাশি বাড়ির সংস্কারে সহায়তার আশ্বাস দেন। অন্যদিকে, বিজেপি এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিযোগ তোলে, যেখানে তারা শুভেন্দু অধিকারীর গাড়ির ওপর ইট ছোড়ার ঘটনা উল্লেখ করে অভিযোগ দায়ের করে। এই পরিস্থিতি রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলে।

খানাকুলের হেলান মুন্সীপাড়ার তৃণমূল সমর্থক মইদুল মুন্সী সম্প্রতি এক অসাধারণ ঘটনা ঘটিয়েছেন, যা তাকে রাতারাতি জনপ্রিয় করে তোলে। শনিবার বিকেলে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম তার বাড়িতে এসে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এই সফর মূলত বন্যা সংক্রান্ত একটি মিটিং শেষে হয়, যেখানে তিনি খানাকুলে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। মিটিং শেষে ফিরহাদ হাকিম তার বাড়িতে যান এবং সেখানে উপস্থিত হন মইদুলের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। এই সময় তিনি তার সাহসের প্রশংসা করেন এবং বলেন, “আমরা ‘জয় বাংলা’ বলব, তাতে যদি প্রাণ যায় যায়। মোদী, যোগী বা অমিত শাহ মারলে মারুক। এরা তো ছাগলের তৃতীয় সন্তান।”
উল্লেখ্য, এই ঘটনা গত বুধবার ঘটে, যখন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তার কনভয়ের সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন। এই সময় শুভেন্দু খুবই চটে যান এবং গাড়ি থেকে নেমে এসে মইদুলের কাছে ‘জয় বাংলা’ বলার জন্য কৈফিয়ত চান। পাশাপাশি তিনি তাকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতেও বলেন। কিন্তু মইদুল পুনরায় ‘জয় বাংলা’ বললে শুভেন্দু তাকে ‘রোহিঙ্গা’ বলে কটাক্ষ করেন। এই ঘটনা হেলান বাসস্ট্যান্ডের মতো জনবহুল স্থানে ঘটে, যা মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়। এই ঘটনার ফলে মইদুল রাতারাতি তৃণমূলের কাছে ‘হিরো’ হিসেবে পরিচিত হন।
এরপরই কলকাতা থেকে ফিরহাদ হাকিম তার বাড়িতে যান এবং বলেন, “আমরা ‘জয় বাংলা’ বলব, তাতে যদি প্রাণ যায় যায়। মোদী, যোগী বা অমিত শাহ মারলে মারুক। এরা তো ছাগলের তৃতীয় সন্তান।” তিনি অভিযোগ করেন, শুভেন্দু অধিকারী গত বুধবার কনভয়ের সামনে ‘জয় বাংলা’ বলায় মইদুলকে ‘রোহিঙ্গা’ ও ‘পাকিস্তানি’ বলে কটাক্ষ করেন এবং তার নিরাপত্তাকর্মীদের মারধর করে মইদুলকে আহত করেন। ফিরহাদ হাকিম মইদুলের সাহসের প্রশংসা করে বলেন, “ভারতের সংবিধান এভাবে কাউকে অপমান করার অধিকার দেয় না।”
ফিরহাদ হাকিম তার বাড়ির সংস্কারে সহায়তার আশ্বাসও দেন। এদিন তার সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় সাংসদ মিতালি বাগ, রাজ্য তৃণমূলের সম্পাদক স্বপন নন্দী ও অন্যান্য স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। ফিরহাদ হাকিমের উপস্থিতিতে মইদুল বলেন, ‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সাধারণ মানুষের জন্য অনেক কিছু করেছেন। উনি উন্নয়নের স্বার্থে জাত-ধর্ম বিচার করেন না। উনি সবাইকে সমান মনে করেন। আমি গর্বিত যে আমি একজন বাঙালি। গ্রামের মানুষদেরও বলবো, আপনারাও ‘জয় বাংলা’ বলুন।’
অন্যদিকে, বিজেপি এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিযোগ তোলে। তারা জানায়, বুধবার খানাকুলের হেলান এলাকায় বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর গাড়ির দিকে ইট ছোড়া হয়। তবে সেই ইট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। গাড়ি থেকে নেমে শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, এই ঘটনার জন্য খানাকুল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বিজেপি বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ। তিনি বলেন, “আমরা এই ঘটনার তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।”
এদিকে, যখন ফিরহাদ হাকিম মইদুলের বাড়িতে যাচ্ছেন, তখনই এই অভিযোগ দায়েরের ঘটনা ঘটে। এই পরিস্থিতি রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তোলে এবং স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এই ঘটনাগুলো স্পষ্ট করে দেয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান ও জাতীয়তাবাদী আবেগ কতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
What's Your Reaction?






