মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিজেপির অভিযোগ: হিন্দু বাঙালিদের ধ্বংসের ষড়যন্ত্র?
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্যের মধ্য দিয়ে বিজেপি নেতা ও বিরোধী দলনেতা সুবেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছেন যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হিন্দু বাঙালিদের ধ্বংসের জন্য কাজ করছেন। তিনি অভিযোগ করেন যে, তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার রোহিঙ্গাদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে হিন্দু বাঙালিদের ক্ষতিসাধন করছে। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে, যেখানে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে তীব্র বাকযুদ্ধ চলছে।

পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্যের মধ্য দিয়ে বিজেপি নেতা ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছেন যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হিন্দু বাঙালিদের ধ্বংসের জন্য কাজ করছেন। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রোহিঙ্গাদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে হিন্দু বাঙালিদের ক্ষতি করছেন। তিনি রোহিঙ্গাদের সমর্থনে একটি প্রতিবাদ সভা করবেন, যেখানে আমরাও রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা করছেন, তা মূলত মুসলিম রোহিঙ্গাদের রক্ষা করার জন্য। এজন্যই তিনি হিন্দু বাঙালিদের ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন।”
এই মন্তব্যটি বিজেপির চলমান অভিযোগের প্রেক্ষাপটে এসেছে অভিযোগের প্রেক্ষাপটে, যেখানে তারা বলছে যে, তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যটিতে রোহিঙ্গাদের সমর্থন দিচ্ছে। বিজেপির অভিযোগের ভিত্তিতে তারা বলছে, মুখ্যমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে হিন্দু বাঙালিদের ক্ষতি করছেন।
অধিকারী আরও বলেন, “তৃণমূলের এই নীতির ফলে হিন্দু বাঙালিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তারা রোহিঙ্গাদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বাংলার ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে এই পরিস্থিতিতে, বিজেপি প্রতিবাদে নামবে এবং রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবে।”
অপরদিকে, সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিজেপির আরেক নেতা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার, অভিযোগ করেন যে, তিনি বাংলার হিন্দুদের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন কোনো সংকটে পড়েন, তখন তিনি বাংলার ‘বাঙালি’ মানসিকতাকে ভুলে যান। তিনি প্রমাণ করেছেন যে, তাঁর মূল লক্ষ্য হলো বাংলার ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ধ্বংস করা। তিনি বাংলার হিন্দুদের একত্রিত হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করার আহ্বান জানাচ্ছেন।”
মজুমদার আরও অভিযোগ করেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার সাংসদ ও এমপিদের নির্বাচনে প্রভাবিত করতে বাংলার বাইরে থেকে অ-স্থানীয় ব্যক্তিদের মনোনীত করছেন। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। তিনি বাংলার সাংসদ ও এমপিদের সংখ্যা কমিয়ে দিচ্ছেন, যাতে বাংলার স্বার্থ ক্ষুন্ন হয়। তিনি বাংলার জনসাধারণের স্বার্থে নয়, বরং নিজের স্বার্থে কাজ করছেন।”
এছাড়াও, বিজেপির এই নেতা অভিযোগ করেন যে তৃণমূল সরকার বাংলার জনসংখ্যা পরিবর্তনের জন্য অবৈধভাবে বাংলাদেশি নাগরিকদের নাগরিকত্ব দেওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, “তৃণমূলের এই ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাংলার জনসংখ্যা পরিবর্তন করে তারা ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইছে। তারা চাচ্ছে ভবিষ্যতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী একজন মুসলিম হবেন।”
অপরদিকে, ১২ জুলাই তৃণমূল কংগ্রেস জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি)-এর বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ মিছিল আয়োজন করে। তারা অভিযোগ করে যে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে অবৈধভাবে বাংলাভাষী অভিবাসীদের হয়রানি করা হচ্ছে এবং তাঁদেরকে ‘বাংলাদেশি’ বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই প্রতিবাদে তৃণমূলের নেতারা দাবি করেন যে এই ধরনের পদক্ষেপ বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও ধর্মীয় সংহতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
উপসংহার:
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে এই বিতর্কিত মন্তব্য ও অভিযোগের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে রাজ্যটি এখন গভীর রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে। বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে এই বাকযুদ্ধের ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ও উদ্বেগ বাড়ছে। যেখানে বিজেপি অভিযোগ করছে যে তৃণমূল হিন্দু বাঙালিদের ক্ষতিসাধন করছে এবং বাংলার জনসংখ্যা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ধ্বংসের চেষ্টা করছে, সেখানে তৃণমূল বলছে যে তারা বাংলার মানুষের অধিকার ও সংহতিকে রক্ষা করছে। এই পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কেমন হবে, তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
What's Your Reaction?






