ভারতের গ্র্যান্ড মুফতি Sheikh Abubakr Ahmad এর গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগে ইয়েমেনে কনডেমড নার্সের মৃত্যুদণ্ড স্থগিতের প্রক্রিয়া শুরু
ভারতের শীর্ষ মুসলিম ধর্মীয় নেতা ও গ্র্যান্ড মুফতি Sheikh Abubakr Ahmad ইয়েমেনে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কেরালার নার্স নিঝিশা প্রিয়া রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ইয়েমেনের রাজধানী সানা-এ নিঝিশার মৃত্যুদণ্ডের স্থগিতের জন্য প্রভাবশালী ইয়েমেনি স্কলার Sheikh Umar bin Hafiz এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এই উদ্যোগের ফলে, নিঝিশার মৃত্যুদণ্ডের কার্যক্রম চার ঘণ্টার জন্য স্থগিত করা হয়, যা তার আইনজীবীদের জন্য আরও সময় সৃষ্টি করে পরিস্থিতি সমাধানের। এই ঘটনা ভারতের মুসলিম সমাজে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ধর্মীয় নেতৃত্বের প্রভাব ও দায়িত্বের উদাহরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ভারতের শীর্ষ ধর্মীয় নেতা ও গ্র্যান্ড মুфти Sheikh Abubakr Ahmad, যিনি ২০১৯ সালে এই উপাধি লাভ করেন, তিনি কেরালার কোট্টাক্কালির বাসিন্দা। তিনি একজন বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার, যিনি বিভিন্ন দেশের ধর্মীয় ও সামাজিক বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত প্রদান করেন। তিনি মূলত বারোভি (সুন্নি) মুসলিম সম্প্রদায়ের একজন প্রভাবশালী নেতা।
শেখ আবুবকর আহমদ ইয়েমেনে নিঝিশা প্রিয়া নামে কেরালার এক নার্সের মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। নিঝিশা প্রিয়া, ৩৭ বছর বয়সী, যিনি কেরালার কোট্টাক্কালি থেকে এসেছেন, ইয়েমেনে একটি দুর্ঘটনাজনিত হত্যাকাণ্ডের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। তার আইনজীবীরা দাবি করেন, এই হত্যাকাণ্ডটি দুর্ঘটনামূলক এবং এটি ঘটে যখন তিনি মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের মধ্যে ছিলেন।
নিঝিশার মৃত্যুদণ্ডের খবর পেয়ে, Sheikh Abubakr Ahmad ইয়েমেনের একজন প্রভাবশালী স্কলার Sheikh Umar bin Hafiz এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি তার অনুরোধে, ইয়েমেনি স্কলারদের কাছে নিঝিশার পরিবারের সঙ্গে আলোচনা চালানোর জন্য পাঠান। এই আলোচনা সফল হয় এবং পরিবারের সদস্যরা চার ঘণ্টার জন্য মৃত্যুদণ্ডের কার্যক্রম স্থগিত করেন। এই সময়ে নিঝিশার আইনজীবীরা তার জন্য আরও সময় সংগ্রহের চেষ্টা চালান।
এই ঘটনা শুধু একটি ব্যক্তিগত বা স্থানীয় ঘটনা নয়, বরং এটি ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতৃত্বের দায়িত্ব ও প্রভাবের একটি উদাহরণ। এটি দেখায় যে, ধর্মীয় নেতা হিসেবে Sheikh Abubakr Ahmad কেবল ধর্মীয় বিষয়ে নয়, সামাজিক ও মানবিক বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।
শেখ আবুবকর আহমদ কে?
শেখ আবুবকর আহমদ, যিনি কান্তপুরাম এপি আবুবকর মুস্লিয়ার নামেও পরিচিত, কেরালার কোঝিকোড়ে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বিভিন্ন ইসলামিক স্কলার ও সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত আছেন এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ধর্মীয় ও সামাজিক বিষয়ে বক্তৃতা দেন। তিনি মূলত বারোভি (সুন্নি) মুসলিম সম্প্রদায়ের একজন প্রভাবশালী নেতা।
তিনি কেরালার কোঝিকোড়ে অবস্থিত মার্কাজ নলেজ সিটি নামে একটি বৃহৎ শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক নগরীর নেতৃত্ব দেন। এই শহরে মেডিকেল, ল’ কলেজ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র রয়েছে। তিনি ধর্মীয় বিষয়ে ফতওয়া (আইনগত মতামত) প্রদান করেন এবং ধর্মীয় ও সামাজিক বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
অতীতে, তিনি কিছু বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য সমালোচিত হয়েছেন। ২০১৯-২০ সালে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) বিরোধী আন্দোলনের সময়, তিনি নারীদের রাস্তায় নামার বিরুদ্ধে পরামর্শ দেন, বলেছিলেন, “পুরুষরা সব কিছু সামলাবে।”
উপসংহার:
শেখ আবুবকর আহমদ এর এই উদ্যোগ প্রমাণ করে যে, একজন ধর্মীয় নেতা কেবল ধর্মীয় বিষয়ে নয়, মানবিক ও সামাজিক দায়িত্বে অবদান রাখতে পারেন। ইয়েমেনে নিঝিশা প্রিয়া রক্ষার জন্য তার এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতৃত্বের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ভবিষ্যতেও ধর্মীয় নেতাদের এই ধরনের মানবিক উদ্যোগের মাধ্যমে সমাজে শান্তি ও মানবিক মূল্যবোধের প্রসার ঘটবে বলে আশা করা যায়।
What's Your Reaction?






