মেঘালয় মধুচন্দ্রিমা হত্যাকাণ্ড: ১৭ দিন পর উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর থেকে গ্রেফতার সোনম রঘুবংশী
মেঘালয়ের মধুচন্দ্রিমা সফরে মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা রাজা রঘুবংশীকে হত্যার অভিযোগে তাঁর স্ত্রী সোনম রঘুবংশীকে ১৭ দিন পর উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একটি ফোন কলের মাধ্যমে সোনমকে শনাক্ত করে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এই হত্যাকাণ্ডে তিনজন ভাড়াটে খুনিকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং একজন অভিযুক্ত এখনও পলাতক। সোনমের প্রেমিক রাজ কুশওয়ার হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী বলে জানা গেছে। মেঘালয় পুলিশ ও মধ্যপ্রদেশ পুলিশ যৌথভাবে তদন্ত চালিয়ে আসছে এবং মামলায় বড় সাফল্য অর্জন করেছে।

মেঘালয়ের মধুচন্দ্রিমা সফরের সময় মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা রাজা রঘুবংশীকে হত্যার অভিযোগে তাঁর স্ত্রী সোনম রঘুবংশীকে প্রায় ১৭ দিন পর উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ থাকা সোনমকে গ্রেফতারের পেছনে একটি ফোন কলের ভূমিকা ছিল মূল। রবিবার রাতে গাজিপুরের এক ধাবা থেকে বাড়িতে ভিডিও কল করার সময় সোনমকে শনাক্ত করা হয় এবং এরপরই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, গাজিপুরের ধাবা মালিক সাহিল যাদব জানান, রাত একটার দিকে কাঁদতে কাঁদতে সোনম তার দোকানে এসে বাড়িতে ফোন করার জন্য মোবাইল ফোন চেয়েছিলেন। সাহিল তাকে ফোন ব্যবহার করতে দেন এবং সোনম একা বসে ফোন করেন। এরপর সাহিল পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে সোনমকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। সাহিলের দাবি, সোনমের কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না এবং তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন।
পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল ইতিমধ্যেই তিনজন ভাড়াটে খুনিকে গ্রেফতার করেছে। তাদের মধ্যে একজনকে উত্তরপ্রদেশ থেকে এবং বাকি দুজনকে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখনও একজন অভিযুক্তকে খুঁজছে পুলিশ। তদন্তে জানা গেছে, সোনমের প্রেমিক রাজ কুশওয়ার এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী ছিলেন।
মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড কে সাংমাও এই মামলায় মেঘালয় পুলিশের সাফল্যের প্রশংসা করেছেন। তিনি এক্স বার্তায় উল্লেখ করেছেন, ইন্দোরের রাজা হত্যাকাণ্ডে মেঘালয় পুলিশ বড় সাফল্য অর্জন করেছে। মধ্যপ্রদেশের তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, একজন মহিলা আত্মসমর্পণ করেছেন এবং অন্য অভিযুক্তকে ধরার অভিযান চলছে।
মেঘালয়ের ডিজিপি আই নোংরাং জানান, ইন্দোরের ওই ব্যক্তির হত্যাকাণ্ডে তার স্ত্রীসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোনমের কোনও আঘাত নেই এবং তিনি বর্তমানে গাজিপুরের ওয়ান স্টপ সেন্টারে রয়েছেন।
ঘটনার পটভূমি:
২২ মে ইন্দোরের দম্পতি রাজা ও সোনম মধুচন্দ্রিমার জন্য শিলং গিয়েছিলেন। ২৪ মে সোনম তার শাশুড়ির সঙ্গে শেষবারের মতো কথা বলেন। এরপর থেকে তাদের ফোন বন্ধ হয়ে যায় এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। ১১ দিন পর পাহাড় থেকে রাজার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তার হাতে ‘রাজা’ ট্যাটু দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়। ময়নাতদন্তে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হয় এবং পুলিশ অস্ত্র উদ্ধার করে। এরপর একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়।
সোনমের খোঁজ পাওয়া যায় ১৭ দিন পর উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর থেকে। তার গ্রেফতারের পেছনে একটি মাত্র ফোন কল ছিল যা তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। এই ফোন কলের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের রহস্য উন্মোচিত হয়।
What's Your Reaction?






